রবীন্দ্রজীবীদের মানুষ কেন ভালবাসে না

রবীন্দ্রজীবীদের মানুষ কেন ভালবাসে না

১৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

১লা জুন ২০১৮

১৮ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ ॥ ১লা জুন ২০১৮

আপনার লেখা প্রকাশ করতে চান?

আমরা সবসময়ই নতুন চিন্তাকে স্বাগত জানাই। আপনার লেখা প্রকাশের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

লেখা জমা দিন

রবীন্দ্রজীবীদের মানুষ কেন ভালবাসে না?

উত্তরটি সহজ। রবীন্দ্রনাথ আর মানুষের মাঝখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রবীন্দ্রজীবীরা। ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে সবচে শক্তিশালী প্রতিবাদ রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যেই মিলবে, অথচ বাংলাদেশের রবীন্দ্রজীবীরা অদ্ভুদ এক হীনন্যতার বশে কখনোই প্রায় বাংলাদেশের প্রধানতম পরিবেশগত সঙ্কটটি নিয়ে কথা বলেন না। ফলে তারা আকুল গলায় ‘আমার সোনার বাংলা’ গাইলে্‌ও মানুষ ভরসা পায় না।

ইতিহাস ও সংস্কৃতি চেতনাতেও একই সঙ্কট, রবীন্দ্রনাথ নিজে বারংবার সংস্কৃতি আর রাজনীতিকে মুসলিম বিদ্বেষী বানাবার বিরোধিতা করেছেন, মিলনের শর্ত তৈরির আহবান জানিয়েছেন। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন থেকে একদম সরে এসে একে প্রকারন্তরে প্রতিক্রিয়াশীল বলেছেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রজীবীদের ইতিহাসচর্চা কিন্তু বরাবর কংগ্রেসী ধারার, ঠিক যেন মুসলিম লীগের ইতিহাস চর্চার প্রতিবিম্ব।

ফলে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ যেখানে ক্রমশঃ রাজনৈতিক হয়ে উঠেছেন সম্প্রদায়ের গণ্ডি ছাপিয়ে, সবাইকে ধারণা করার বাসনা নিয়েও নিজের উজ্জ্বলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, রবীন্দ্রজীবীরা গুরুকে বেঁধেছেন সংকীর্ণ পরমুখাপেক্ষী পরদেশী স্বার্থে, এবং আপন জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছেন।

ফলে যিনি তার সাহিত্যের সৌন্দর্য শুধু না, চেতনা দিয়েও হতে পারতেন বাংলাদেশের আপামর মানুষের সবচে বড় শক্তি, ম্লান মূঢ় মূক মুখে দিতে পারতেন ভাষা, তার অন্ধ মুরিদরা তাকে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন অভিজাত, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্টতাহীন এবং নতজানু রাজনীতির প্রতীকে।

রবীন্দ্রনাথ ফারাক্কা নিয়ে, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে আসলে কি ভাবতেন বেঁচে থাকলে, তারই সামান্য অনুসন্ধানের চেষ্টা তাঁরই প্রবন্ধ থেকে রসদ। নদীর ওপর দখল মুক্ত করার মতই রবীন্দ্রনাথকে মুক্ত করাটাও জরুরি কাজ।

লেখকঃ ফিরোজ আহমেদ