কিশোরের প্রতিজ্ঞা পূরণের গল্প রানিখালের সাঁকো (রিভিউ)

কিশোরের প্রতিজ্ঞা পূরণের গল্প রানিখালের সাঁকো (রিভিউ)

৩০শে ভাদ্র ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

১৪ই সেপ্টেম্বর ২০১৮

৩০শে ভাদ্র ১৪২৫ বঙ্গাব্দ ॥ ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০১৮

আপনার লেখা প্রকাশ করতে চান?

আমরা সবসময়ই নতুন চিন্তাকে স্বাগত জানাই। আপনার লেখা প্রকাশের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

লেখা জমা দিন

 

প্রত্যয় আর সংগ্রামী মানসিকতা কিভাবে একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে সহায়তা করে এ নিয়েই আহসান হাবীবের এই কিশোর উপন্যাসটি।কিশোর উপন্যাস হলেও পাঠ মাত্রই যে কোন পাঠক তার নিজ জীবন, জীবনের লক্ষ্য, কর্তব্য-কর্ম নিয়ে কিছুটা হলেও ভাবিত হবেন। বইটির স্বার্থকতা এখানেই।

জীবনের লক্ষ্য, কর্তব্য-কর্ম নির্ধারণ করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় অনেক কাজই শুরু করি কিন্তু শেষ করা হয়ে ওঠে না। নানান প্রতিকূলতা থামিয়ে দেয় সে কাজ মাঝ পথে । হোঁচট খেতে খেতে এপথ থেকে ওপথে , ওপথে থেকে সেপথে ঘুরতে ঘুরতে পথ খুঁজে ফেরে সাধারণ মানুষ সাদা-কালো স্বপ্নগুলো। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে স্বপ্নপূরণে অটল অবিচল থাকতে পারে যারা , তারাই হয় সফল মানুষ।
.
গল্পের সারসংক্ষেপ
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র মতিজান গ্রামের পিতৃ-মাতৃহীন কিশোর আজীজ। বাবা-মার মৃত্যুর পর চাচা-চাচীর সংসারে অনাদর অবহেলায় বড় হতে থাকে সে। এক সময় চাচা-চাচী তার পৈত্রিক সম্পত্তি আত্নসাৎ করে নানারকম অত্যাচার নির্যাতন শুরু করলে মামার সংসারে ঠাঁই হয় তার। সেখানে অভাবের সত্ত্বেও আদরেই বড় হতে থাকে আজীজ। তবে দৃশ্যপট পাল্টে যায় একদিনের এক ঘটনায়।

গ্রামের প্রেসিডেন্টের ছেলে জয়নাল । আজীজ যে স্কুলে পড়ে সেটা জয়নালের বাবার দেয়া। যোগ্যতা না থাকলেও বাবার জোরে স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে নিজস্ব আইন-কানুন চালু করে সে। তেমনি একটি নিয়ম হল, স্কুলে আসা যাওয়ার পথের রানিখালের সাঁকোটা তার আগে কেউ পার হতে পারবে না। একদিন এ নিয়েই বাঁধল এক বিরোধ। নানান ঘটনায় গল্প এগোয়। আজীজও একদিন শক্তিমান প্রকৃত মানুষ হয়ে মুখোমুখি হয় জয়নালের । শেষ দৃশ্যটি যেকোন পাঠকের ভালো লাগাকেই ছুঁয়ে যাবে।
আজীজের সংলাপ ‘’আত্নরক্ষার চেষ্টা করতেও যে রাজি নয়; তেমন কাপুষকে আঘাত করা আমাদের নিয়ম নয়!”
.
পাঠ সমালোচনা
কিশোর উপন্যাস হলেও যেকোন বয়সের পাঠক বইটি পড়ে ইতিবাচক স্বপ্নে অনুপ্রাণিত হবেন। গল্পের ভাষা এবং বর্ননার ধরন একেবারেই সহজ সরল হওয়ায় যেকোন শ্রেণির পাঠকের জন্যই এটি সহজ পাঠ্য।
তবে পরিনত পাঠক পাঠমাত্র গল্পের বুনটের নানান দুর্বলতা টের পাবেন । গল্প এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে ছন্দ পতনও বেশ চোখে পড়ে। আজীজের সাথে রহমানিয়া হোটেল মালিকের পরিচয় এবং তার পুত্র বনে যাওয়ার ব্যাপরটি ফ্যান্টসির মত মনে হয়। তারচেয়ে বরং মন্তাজের চরিত্রটি বাস্তব সম্মত।যদিও ঘটনা পরিক্রমা অনেক ক্ষেত্রেই সিনেমাটিক মনে হয়েছে। কৈশরে পাঠ করলে এসব ফ্যান্টাসি আকর্ষনীয় মনে হত কি না জানি না । তবে এটুকু জানি বইটি পাঠের পড় পাঠক মাত্রই তার নিজ জীবনের লক্ষ্য আর স্বপ্ন নিয়ে ভাবিত হবেন।

বই পাঠে ঋদ্ধ হোক সকলের জীবন।