বই পড়ার অভ্যাসের ধরণ ও যেসব বই পরিবর্তন আনতে পারে জীবনে
১৯শে আষাঢ় ১৪২৫ বঙ্গাব্দ
৩রা জুলাই ২০১৮
১৯শে আষাঢ় ১৪২৫ বঙ্গাব্দ ॥ ৩রা জুলাই ২০১৮
আপনার লেখা প্রকাশ করতে চান?
আমরা সবসময়ই নতুন চিন্তাকে স্বাগত জানাই। আপনার লেখা প্রকাশের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
লেখা জমা দিনবই মনের খাবার। এক এক খাবারের যেমন এক এক রকম খাদ্য গুন, এক এক ধরণের বইয়েরও তেমনি এক এক ধরণের প্রতিফলন আছে। ইদানীং একটা উপলব্ধি হল, শুধু সাহিত্য পড়া ঠিক না। এটা মনের বাইরে শান্তি আনে, ভেতরে আগ্রহ ও সৌন্দর্য বোধ তৈরি করে, ধৈর্য্য বাড়ায়।
কিন্তু রুক্ষতা কমিয়ে দেয়। যে রুক্ষতা জীবনের লড়াইয়ে টিকে এবং জিতে যাওয়ার জন্য জরুরি। সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক এবং ইতিহাসধর্মী বই পড়লে মনে প্রশ্ন তৈরি হয়। এবং সেসব প্রশ্ন দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য খুবই দরকারি। তবে এখানেও একই অবস্থা। সবকিছুকে খেলো মনে করে ক্ষমা করে দিতে ইচ্ছে হয়। যে যুক্তি তৈরি হয় তা অবিচারের দোরে সঠিকভাবে পৌছায় না, অনেক ক্ষেত্রে কড়াই নাড়তে পারেনা। কারণ এসব জ্ঞানকে কাজে লাগানোর সাথে ক্ষমতা শব্দটি যুক্ত। ক্ষমতা হল পদার্থবিজ্ঞানের একটি Term. এর একটা সূত্র আছে। যা পৃথিবীর সবকিছুর জন্য সূর্যের মত সত্য। ক্ষমতা=শক্তি/সময়। অতএব সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় শক্তি নিয়ে যেটুকু কাজ করা হয়, তাই ই বস্তুর ক্ষমতা। তাই এসব পড়ে যেসব প্রশ্ন তৈরি হয় তা কাজে লাগাতে হবে। কাজে না লাগানো গেলে এসব পড়ে কোন ক্ষমতা অর্জিত হল না। মানে হুদাই পড়া হইল/সময় নষ্ট হইল। মাঝখান থেকে দিন-দুনিয়ার ঠোকর খেয়ে প্রতিরোধের ইচ্ছাশক্তি হারানো হইল। তবে এটা ঠিক শুদ্ধ আনন্দটুকু যে অর্জিত হয় সেটা বাড়তি পাওয়া। অনেকে শুধু এজন্যই পড়ে। কিছু করতে না পারলেও অপকারী জন্তু হওয়া থেকে এসব আনন্দ মানুষকে রক্ষা করে। সেটাইবা কম কিসে? লোকে বলে অন্তত এসব পড়ুয়ারা কাউকে ক্ষতি তো করেনা। সত্য। কিন্তু আসলেই সেটা শেষ কথা? শুধু এসব বিষয় পড়তে গিয়ে দায়িত্ববোধের যথেষ্ট ঘাটতি তৈরি হয়। সবকিছু শান্তিপূর্ণ করতে গিয়ে জগতটাকে ছোট করে আনা হয়। জীবনব্যাপী এক ধরণের হতাশা বোধ এর আড়ালে দায় এড়ানোর Justification তৈরি হয়ে যায়।
জীবনে সংবেদনশীল হওয়া যতটা জরুরি, দায়িত্বশীল ও Proactive হওয়া ঠিক ততটাই জরুরি না?
আমি এসব পড়তে একদমই বারণ করছিনা। এসব কিছুই পড়তে হবে।
আমার যেটা ব্যক্তিগত আবিষ্কার তা হল একটা এন্টিবায়োটিক।
শুধু এই সাহিত্য-সমাজবিজ্ঞান-দর্শন-ইতিহাস পড়ে কেন্নো যাতে না হতে হয় তার এন্টিবায়োটিক। সাহিত্য-সমাজ-দর্শন-ইতিহাস পড়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে Entrepreneur বা উদ্যোগ সম্পর্কিত সব ধরণের বই পড়তে হবে।
সেটা উদ্যোগ বা উদ্যোক্তার সফলতার ব্যর্থতার গল্প হতে পারে, প্রক্রিয়া হতে পারে, প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। পাঁচটার মধ্যে অবশ্যই একটা এই বিষয়ক বই পড়তে হবে। নইলে কেন্নো হওয়া থেকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা। একজন উদ্যোক্তা রাতে ঘুমাতে পারেনা সত্য। কিন্তু এরা হল যেকোনো সমাজের জীবনীশক্তি ও ভরকেন্দ্র। এই ভরকেন্দ্র থেকে বাইরে গিয়ে কি সমাজ গড়বে বা কি করবে বাকিরা? উদ্যোক্তা ও উদ্যোগ বিষয়ক পড়াশুনা যেকোনো পড়ুয়াকে নতুন চিন্তা ও সে চিন্তায় গতি দিতে পারে। কাজেও গতি আনে। পুরো জীবন দর্শন ও বদলে দিতে পারে। বদলে দিতে পারে জীবনও। বিশ্বাস না হলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। আমি নিজে তেমন এসব বিষয়ে পড়াশুনা করিনি এখনও সেভাবে। তবে শুরু করেছি। আমার পড়ার প্রাথমিক তালিকা হল:
The Best We Could Do by Thi Bui
Shoe Dog: A Memoir by the Creator of Nike, by Phil Knight.
The Myth of the Strong Leader: Political Leadership in the Modern Age by Archie Brown
Dream Big, by Cristiane Correa
The Art of War by Sun Tzu
Emotional Intelligence: Why It Can Matter More Than IQ” by Daniel Goleman
Lean In: Women, Work, and the Will to Lead
The 7 Habits of Highly Effective People” by Stephen R. Covey
Zero to One: Notes on Startups, or How to Build the Future’ by Peter Thiel and Blake Masters
Rework’ by Jason Fried and David Heinemeir Hansson