“এলিস গ্রেস” – এ দেখা মাকড়শারা

“এলিস গ্রেস” – এ দেখা মাকড়শারা

১২ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

২৬শে মে ২০১৮

১২ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ ॥ ২৬শে মে ২০১৮

আপনার লেখা প্রকাশ করতে চান?

আমরা সবসময়ই নতুন চিন্তাকে স্বাগত জানাই। আপনার লেখা প্রকাশের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

লেখা জমা দিন

 

কানাডিয়ান লেখিকা, মার্গারেট অ্যাটউড এর ”এলিস গ্রেস” বইটা আগেই পড়েছিলাম । এখন নেটফ্লিক্স এ সিরিয়ালটা দেখে ফেললাম । সেখানে অদ্ভুত একটা ডায়লগ আছে ,

“মাকড়সা এক রাতেই তার জ্বাল বিস্তার করে ঘর নোংরা করতে পারে”

লাইনটা মাথায় হঠাৎ ঢুকে গেল। খুব সাধারন একটা কথা, অথচ এই বিষয়টা আমাদের জীবনের জন্য প্রচণ্ড ভাবে সত্যি। আমাদের জীবনে মাকড়সারা চারপাশেই থাকে। এদের আর একটা নাম নেগেটিভ মানুষ ।

ধরুন, কোন ছেলে সদ্য প্রেমে পরেছে, এই মাকড়সা টাইপের মানুষেরা প্রথমেই বলবে, এই প্রেম হবে না, হলেও সম্পর্ক টিকবে না, তারপরও যদি সম্পর্কটা হয়েই যায় এরা অপেক্ষায় থাকে কখন এই সম্পর্কে সমস্যা তৈরি হবে।

আবার ধরুন কার বিয়ের অনুষ্ঠান হল, এই মাকড়সারা খুটে খুটে বের করবে কেন এই বিয়ের অনুষ্ঠানটা অমুকের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে খারাপ হয়েছে। শুধু এসব ক্ষেত্রেই না, কেউ হয়ত লেখালিখি শুরু করেছে সেখানে সেই মাকড়সারা বলে বসবে, কত এমন লেখক আসল গেল, লিখে কিছু হয় না ।

কোন ছেলে ক্রিকেট খেলে, এরা বলবে, সাকিব আল হাসান একটাই আছে। খেলেটেলে কিছু হয় না।
আবার কেউ তার জীবন নিয়ে খুব হ্যাপি সেখানে এরা বলবে, ধুর এগুলা হল সব লোক দেখানো । এরা মোটেও সুখে নেই !
এরা ২৫ বছরের মেয়ে কে বুড়ি বলবে, অন্যের ছেলে কেন বিয়ে করছে না তাই নিয়ে গবেষণা করবে। কার ছেলে কি করে, কার মেয়ে কোথায় যায় , কার বৌ এর স্বভাব কেমন , কার জামাই কেমন আয় করে সে তো আছেই । এরা মানুষ কে মানসিক ভাবে ধ্বংস করে দেয় , বৃদ্ধ করে দেয় , জীবনী শক্তি কেড়ে নেয় ।

ফেইসবুক জুড়ে একটা এপ্স দেখতে পাচ্ছি স্টুলিশ নামের , যেখানে মানুষ বেনামে যা খুশি তাই বলতে পারে। এটা হল সেই মাকড়সাদের একটা বিচরণ ক্ষেত্র । যেখানে প্রচুর এমন মাকড়সারা ঘুরে বেড়াচ্ছে ।

লেখার শুরুতেই বলেছিলাম, মাকড়সা এক রাতেই তার জ্বাল বিস্তার করে ঘর নোংরা করতে পারে। এরা নিজেরা ভাল থাকে না , অন্য কেও ভাল থাকতে দেয় না। এরা একটা সুযোগেই অনেক সুন্দর সময় , গোছানো জীবন কিংবা সুন্দর কোন উদ্যোগ ধ্বংস করে ফেলতে পারে ।

এই মানুষগুলো এরিয়ে না চললে কোন ভাবে ভাল থাকা সম্ভব না । হোক সে কাছের মানুষ, কিংবা অচেনা কেউ , পরম আত্মীয় কিংবা বন্ধু, কিন্তু এরা প্রচণ্ড ক্ষতিকর। তাই এদের জীবন থেকে তাড়ানো খুব জরুরী । এদের কে সুযোগ দিলে এরা নেগেটিভিটি ছড়াবেই । তাই এদের সুযোগ দেয়াই উচিৎ না । যে হাসি কেড়ে নেয়, যে কার আনন্দে খুঁৎ খুঁজে বেড়ায় , সে অবশ্যই বন্ধু না , আপন না। তার সাথে কোন আপোষ চলে না