আপনার লেখা প্রকাশ করতে চান?
আমরা সবসময়ই নতুন চিন্তাকে স্বাগত জানাই। আপনার লেখা প্রকাশের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
লেখা জমা দিনবইঃ মাই জার্নি।
লেখকঃ এ পি জে আব্দুল কালাম।
বঙ্গানুবাদঃ রাব্বি উস সানী।
বইয়ের ধরণঃ আত্মজীবনীগ্রন্থ।
প্রকাশকঃ সবুজপাতা।
“কেবল রাজনীতি দিয়েই একটি জাতি তৈরি হয় না।একটি জাতি তৈরি হয় হাজারো লোকের উৎসর্গের মধ্য দিয়ে।তাদের মেধার দ্বারা।এভাবেই তৈরি হয় একটি জাতি। যখন আমরা অন্যদের ওপর কর্তৃত্বের ক্ষমতা অর্জন করি,তখন আমরা মনে করি যে, আমরা সাফল্যের চূড়ান্ত শিখায় পৌঁছে গেছি।তবে তখন আমাদের পেছনে ফিরে তাকানো উচিৎ এবং দেখা উচিত যে, আমরা কাদের উৎসর্গ এবং অবদানের কারণে নিজেদের দৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে পেরেছি। যখন আমি আমার বন্ধু অরুণ তিওয়ারির সাথে এই ঘটনা নিয়ে কথা বলেছিলাম, সে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল এই ঘটনা দিয়ে কি বলতে চাও? আমার উত্তর ছিল ভালো হওয়ার ভান করার দরকার নেই।সৎ হতে চেষ্টা করো।সেবা করার নিগূঢ় ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করো। আমরা রাজনীতির বহির্মুখীরুপে আটকে আছি।আর এই রাজনীতিই দেশ গড়েছে ভেবে ভুল করে বসে আছি।যে সকল উৎসর্গ, মেধা এবং নিষ্ঠা চোখে পড়ছে মূলত তারা গড়ে তুলছে এই দেশকে।..”
কত সত্য কথা কোনো দ্বিধা ছাড়াই কত অকপটে বলে ফেলা যায়! ভারতের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম এর আত্মজীবনী নির্ভর এ বইয়ের প্রতিটা পাতায় আছে মুগ্ধতার ছোঁয়া। মেধা আর পরিশ্রমের সমন্বয় যে মানুষকে কতটা উচ্চে আসীন করতে পারে শ্রদ্ধেয় আব্দুল কালাম তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আর সেই ক্ষেত্রে একটি শিশুর সুন্দর শৈশব যে কতটা ভূমিকা পালন করতে পারে তা সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন তিনি।
এই বইটিতে আব্দুল কালাম তার শৈশব থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রতিটা ধাপে যেসকল বাধাকে জয় করেছেন আর যেসকল মানুষের সহযোগীতা এবং অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তার বর্ণনা করেছেন মূলত। তাঁর শৈশব কেটেছে রামেশ্বরাম নামক এক ছোট্ট গ্রামে।আব্দুল কালামের পিতা ছিলেন একজন মসজিদের ইমাম।ঐ গ্রামে একটি গীর্জা এবং এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় মন্দিরও আছে। তবুও সম্প্রীতির এক অটুট বন্ধনে তিনি বেড়ে উঠেছেন যা তাকে পরবর্তীতে মানুষকে জাতি ও সম্প্রদায়ের উর্ধে নিয়ে ভালোবাসতে শিখিয়েছে। শৈশবেই তার ভীষণ পরিশ্রম করে পরিবারে আর্থিক সহযোগীতার(পত্রিকা বিক্রি) যে বর্ণনা তা একজন পরিশ্রমী মানুষের প্রতিচ্ছবিকে সুচারুরূপে প্রকাশ করে।তার পিতার নৌকা তৈরির কাজে সহযোগীতা থেকে নৌকা বানানোর কৌশল শেখার যে আগ্রহ তাতে তার কিছ তৈরির, সৃজনশীলতার বিষয়টা তার বাবা এবং চাচাতো ভাই জালালউদ্দীনের নজরে আসে।
বইটির মধ্যভাগে আছে এ পি জে আব্দুল কালামের কর্মজীবন যেখানে তিনি তার জীবনের অনেক সফলতা এবং তার পিছনের পরিশ্রম এবং সাময়িক ব্যর্থতার বর্ণনা করেছেন। বর্ণনা করেছেন তার শিক্ষকদের অবদান তার সামান্য আব্দুল কালাম থেকে স্বনামধন্য এবং জগৎবিখ্যাত হয়ে ওঠার গল্প।শেষভাগে আছে তাঁর কিছু অসফলতার গল্প, তার জীবনের সফলতার পিছনের কারিগরদের গল্প, তাঁর কৃতজ্ঞতার গল্প। আত্মজীবনীগ্রন্থ যাদের খুব প্রিয় এবং অনুপ্রেরণা খুঁজে ফেরেন এসব বইয়ে এটি তাদের জন্য সুন্দর একটি পছন্দ হবে নিশ্চয়।আর অনুবাদক খুবই প্রাঞ্জল ভাষায় বইটি সম্পাদনা করেছেন।
আমি রেটিং এ এই বইটিকে ১০ এর ভিতর ৯ দিবো।